সিএন ডেস্ক :: পবিত্র আল কোরআনে যতগুলো ফলের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে খেজুর অন্যতম। খেজুর এতটাই পুষ্টিকর ও উপকারী যে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এ ফলটিকে রাখার কথা বলেন পুষ্টিবিদেরা। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে খেজুরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক এক আয়োজনে খেজুরের পুষ্টিগুণ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ আজমেরী রহমান। এখন চলছে পবিত্র রজমান। এ সময় খেজুর খাওয়া বেশ উপকারী। আজমেরী রহমান বলেন, সারা দিনের রোজার ক্লান্তির অবসান ঘটাতে খেজুরের জুড়ি নেই। খেজুরের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। তবে প্রথমেই যে বিষয়টি আসে, দীর্ঘক্ষণ রোজা রাখার ফলে অনেকের পেটে গ্যাস জমে। যদি কেউ ইফতারিতে ভারী খাবার গ্রহণের পূর্বে দুটি খেজুর খেয়ে নেন, তাহলে কিন্তু পেটের গ্যাস কমে যাবে।
আজমেরী রহমান বলেন, এখন অনেকে সর্দি-কাশি-কফজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। খেজুর কিন্তু এ ক্ষেত্রে জাদুর মতো কাজ করবে। যদি কেউ দুটি খেজুর গ্রহণ করে থাকে, তার সর্দি-কাশি-কফজনিত রোগের মুক্তি ঘটবে। কীভাবে? আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে। এর উত্তর, এতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সর্দি-কাশি-কফজনিত রোগের সাথে লড়াই করতে পারে। খেজুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সালফার, আয়রন, কপার, পটাশিয়াম, ক্লোরিন, ফাইবার; যা শরীরের সকল ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলসের ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম। খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞের মতে, খেজুরে রয়েছে গ্লুকোজ বা ন্যাচারাল সুগার, যা আপনার দীর্ঘক্ষণের ক্লান্তি মেটাতে খুব সাহায্য করে থাকে। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার কারণে শুধু পেটে গ্যাসই জমে না, অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগে আক্রান্ত হন। সে ক্ষেত্রে খেজুরে বিদ্যমান ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে লড়াই করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, খেজুর বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ, খেজুরে বিদ্যমান ভিটামিন ও মিনারেলস মায়ের দুধের পুষ্টি জোগায় এবং এর মাধ্যমে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার গবেষণা থেকে জানা যায়, খেজুরে বিদ্যমান ডায়েটারি ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং ফেনোলিক্স মস্তিষ্ক বিকাশে সাহায্য করে থাকে। এবং এর পলিফেনোলিক কমপাউন্ড ডিমেনশিয়া ও অ্যালঝাইমার রোগকে ধীরকরণে সাহায্য করে। যাদের রক্তস্বল্পতা রয়েছে, তারা দুই থেকে তিনটি খেজুর গ্রহণ করতে পারেন। এর আয়রন আপনার রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। খেজুরে গ্লাইসোমিক ইনডেক্স কম, যে কারণে এ ফলটি ধীরে ধীরে হজম হয়। বুঝতেই পারছেন, ডায়াবেটিক রোগীরা নিঃসন্দেহে খেজুর গ্রহণ করতে পারবেন। এ ছাড়া খেজুর হৃদরোগ, দাঁতক্ষয়, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি রোগের সমস্যা সমাধান হিসেবে কাজ করে থাকে। ভাবুন তো, মহান আল্লাহতায়ালা এক খেজুরে কত পুষ্টি দিয়েছেন। আমরা কেউই চাই না এ ধরনের পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হতে। তাই রমজান ছাড়াও প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি হলেও খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করুন।
পাঠকের মতামত: